ছোটে গোলাম ফকিরের মেলা

মানুষ বানাইছে আল্লা প্রেমের কারণে

আর এই প্রেম আর বিশ্বমানবতার টানেই মুর্শিদের সাথে এবং সর্বোপরি মানুষের সাথে মানুষকে ‘ প্রেমের ডুরি ‘ তে বাঁধতে বসে রসিদ চাঁদের চালিশার মেলা। হরেক রকম পাগল এসে মিলে যায় এই মেলায়। মেলা অর্থে মিলন। আর এ যেন সত্যিই এক মিলন মেলা। রসিদ চাঁদের আসন ছিল বাংলাদেশের ঢাকা জেলার মানিকগঞ্জে। সেখানেই চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন তিনি। আর বর্তমানে সেই স্থানকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এক মাজার। রসিদ চাঁদের স্মরণে বেশ ভক্তিভরেই সেখানে তার উরস পালিত হয়। সেই উরসের কিছুদিন দিন পর প্রতি চৈত্র মাসে এ দেশে ছোটে গোলাম পাগল তার গুরু রসিদ চাঁদের স্মরণে আয়োজন করেন এই চালিশার মেলা। দুই বাংলার বহু সাধু গুরুরা এসে মিলিত হন এই মেলায় । ‘তাহাদের ঘরবাড়ি’র আমরা কয়েকজনও পৌঁছে গেছিলাম বহরমপুর থেকে প্রায় 50 কিমি দূরে পদ্মার খুব কাছাকাছি জলঙ্গীর চাঁদবিলা গ্রামে। সেখানে গ্রামের একদম শেষে খোলা প্রান্তরের মাঝে দাঁড়িয়ে আছে ফকির মওলা দরবার শরিফ। চলতি নাম, ছোটে গোলাম পাগলের আশ্রম। এই আশ্রমকে ঘিরেই বসে দুদিনের চালিশার মেলা। এই ঠিকানা আমাদের কাছে নতুন নয়। বিগত কিছু বছর ধরে হয় একক ভাবে বা তাহাদের ঘরবাড়ির হয়ে আমরা যোগ দিয়ে আসছি এই মেলায়। এবং এই আসা যাওয়ার মাঝে আমরা এই আশ্রম ও আশ্রমের আশেপাশের জায়গার বেশ কিছু ছবিপত্তর তুলেছি। ছবিতে নিজেদের চেনা জায়গাগুলোকে দেখে স্থানীয় মানুষদের প্রতিক্রিয়া কেমন হয়, তা দেখার ও জানার ঔৎসুক্য থেকে আমরা সেই ছবিগুলোকে ‘ তাহাদের ঘরবাড়ি ‘র হয়ে মেলায় আসা সকল মানুষের জন্য প্রদর্শন করবো বলে ঠিক করি।

যেমন ভাবা, তেমন কাজ। মেলার আগেরদিন আমরা ছবি ও ছবি টাঙানোর স্ট্যান্ড নিয়ে পৌঁছে যাই ছোটে গোলাম দার আশ্রমে। আশ্রমে পৌঁছাতেই দেখি যে মেলা উপলক্ষ্যে আশ্রম বাহারি রঙের আলোয় সেজে উঠেছে। আশ্রমে ঢোকার মুখে বড়ো গেটের আলো লাগানোর কাজ তখনও চলছে।

মূল আশ্রম ঘরের দিকে খানিক এগোতেই কানে ভেসে আসে দোতারা, প্রেমজুড়ির ধ্বনি।


” গান হলো ইসকের গাঁজা “


আর সেই গঞ্জিকা সেবন করে রুহকে তাজা করতে আশ্রমের একটা গোলঘরে দেখি বসেছে গানের আসর। একই সাথে আশ্রমের ভিতরের ঘরে বসেছে আর এক গানের আসর। এইখানে একটা গোলঘরে রাখা আছে রসিদ চাঁদের ছবি। গুরুকে স্মরণ করে মেলা আর গুরুর কক্ষ না সাজালে হয় বুঝি! তাই এই গোলঘরকে ভক্তরা সাজিয়ে তুলেছে রঙিন আলো আর রঙিন কাগজে। এখানে বসা আসরের মধ্যমণি হাফেজ মাসুম ফকির। তিনি এসেছেন বাংলাদেশ থেকে। বর্তমানে তিনি মানিকগঞ্জে গড়ে ওঠা রসিদ সরকারের মাজারের খাদেম। তাকে ঘিরে বসে রয়েছেন অন্যান্য আরো কয়েকজন ফকির ও ভক্তবৃন্দ। তারা অধিকাংশই বাংলাদেশ থেকে আগত। একটা সরু ধাতুর নলে ফুঁ দিয়ে আসর শুরু করার আদেশ দিলেন মাসুম ফকির। সঙ্গে সঙ্গে একসাথে বেজে উঠলো শাঁখ, ঢোল ও প্রেমজুড়ি। এরপরেই চলতে লাগলো একের পর এক মহাজনী পদের উজানধারা। রাতের খাওয়ার সময় হলে সেদিনের মত গানের আসের সমাপ্ত হয়। বাইরে তখন বেশ ফুরফুরে একটা হাওয়া দিচ্ছে – দিনের ঠা ঠা রোদ আর প্যাঁচ প্যাঁচে গরমের পর রাতের এই দমকা বসন্তের হাওয়া যেন স্বস্তিরই অপর নাম।

পরের দিন সকাল হতেই দেখি আশ্রম ঘরের দাওয়ায় মাসুম ফকির তার ভক্তবৃন্দ নিয়ে গান করতে বসে পড়েছেন। গানের মাঝে মাঝে বলছেন কিছু কিছু কথা। তার ঠিক উল্টো দিকেই চলছে দুপুরের সেবাশান্তির আয়োজন। প্রাতঃরাশ শেষে এই গানের আসর আশ্রমের দাওয়া থেকে উঠে গিয়ে বসে আশ্রম ঘরের সামনের এক গাছতলায়।

গাছের পাতার ফাঁকে ফাঁকে রৌদ্র ছায়ার খেলা দেখতে দেখতে আর আসরের গানে মন মজিয়ে বসে থাকতে থাকতে কখন যে সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে যায়, আমরা টেরই পাইনা। মেলায় আস্তে আস্তে আরো মানুষজন আসতে শুরু করেছেন ইতিমধ্যেই। গ্রামের মানুষজনও এসে এসে ঘুরে যাচ্ছেন আশ্রমে।

দুপুরের স্নান – আহরাদি সেরে আমরাও আস্তে আস্তে ছবিগুলো টাঙানোর তোড়জোড় শুরু করি।

অনুষ্ঠানের জন্য তৈরী করা মূল মঞ্চের সামনের বসার জায়গার শেষে দুখানা স্ট্যান্ডে কালো কাপড় টাঙিয়ে দড়ি ও ক্লিপের সাহায্যে মোট 26টি ছবি ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। ছবিগুলো লাগানোর সময় থেকেই মানুষের কৌতূহল ছিল চোখে পড়বার মতো। নিজেদের গ্রাম, গ্রামের পরিচিত কিছু মানুষজনকে ছবিতে দেখে অনেকেই দেখি খিল খিল করে হেসে উঠছিলো। মূল মঞ্চের ডানপাশে খোলা মাঠে তখন আসতে শুরু করেছে দোকানিরা তাদের মেলার দোকানের সরঞ্জাম নিয়ে। কেউ পেঁয়াজি বেগুনী ভাজবার জন্য বেসন ফ্যাটাতে ব্যস্ত, কেউ বা ব্যস্ত বাচ্চাদের মনোরঞ্জনের জন্য আনা ট্রাম্পলিন ঠিকঠাক করতে, আবার কেউ পাঁপড় জিলিপি ভাজার জন্য কড়াইয়ে তেল গরম করতে ব্যস্ত, এমনই আরো অনেক। আমাদের ছবি টাঙানো শেষ হতেই দেখি একদল বাচ্চা ছবিগুলোর সামনে এসে ভিড় জমিয়েছে। তাদের মধ্যেই কয়েকজন নাকি ফ্রেমবন্ধী আছে প্রদর্শিত কয়েকটা ছবিতে। সেই দেখে তারা ভারী মজা পেয়েছে।

সন্ধ্যের পর মূল মঞ্চে অনুষ্ঠান শুরু হলে মেলায় মানুষের ভিড় আরো বাড়তে থাকে। ভিড় বাড়তে থাকে আমাদের প্রদর্শিত ছবিগুলোর সামনেও। মেলায় আগত আট থেকে আশি প্রায় সকলেই একবার করে দাঁড়িয়ে চোখ বুলিয়ে দেখে নিচ্ছে ছবিগুলো, কেউবা আবার অনেকক্ষণ সময় নিয়ে দেখছে। আমরাও ভারী কৌতূহলী হয়ে পাশে বসে বসে দেখছি মানুষের ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া। এদিকে প্রদর্শিত ছবিগুলোর ছবি তুলতে ব্যস্ত খুদে থেকে বড়ো অনেকেই। গানে গানে, ছবিতে, সাধু সঙ্গে কেটে গেলো মেলার প্রথম দিনটা। প্রদর্শনী শেষে ছবিপত্তর গুটিয়ে রাখতে রাখতে তখন বেশ অনেকটাই রাত হয়ে গেছে।

আশ্রমের সামনের দিকের একটা গোলঘরে আমরা রাতের ঝোড়ো হাওয়ায় বসে আগামীদিনের কাজের পরিকল্পনা করছি, এমন সময় বেশ মর্ম বিদারী এক কন্ঠস্বর ভেসে এলো। আশ্রমের দিকে যেতে দেখি মধ্যরাতের ফাঁকা মূল মঞ্চটার সামনের বসার জায়গাটায় বসে আপন মনে গেয়ে চলেছেন একজন। মাথায় তার বব মার্লের মত লকস। দেখতেও খানিকটা অমনই। একটা প্লাস্টিকের ফাঁকা ড্রাম বাজিয়ে তিনি গাইছেন ” পিরিতির বাজার ভালো না “। আমরাও গিয়ে বসলাম। আলাপ পরিচয় সারলাম। এই গ্রামেই থাকে সে। নাম, জান মোহাম্মদ শেখ। সবাই তাকে চেনে ইলেকট্রিক পাগল নামে। পরিচয় পর্ব শেষে আবার আপন খেয়ালে গান ধরলেন তার সেই হলুদ ড্রাম বাজিয়ে। মঞ্চের পাশেই সাধু গুরুদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইলেকট্রিক পাগলের গান শুনে সেখান থেকে সাধুরাও এক একটা গানের শেষে সমস্বরে বলে উঠছেন ” জয়গুরু “। মাঝরাতে যে এমন একজন পাগলের দেখা পাবো কে জানতো! কিছুক্ষণ গান শুনে সেদিনের ক্লান্তি কাটাতে আমরা গেলাম একটু বিশ্রাম নিতে।

দ্বিতীয়দিন সকাল থেকে মোটামুটি একই দৃশ্য চোখে পড়ে। একদিকে গাছতলায় অস্থায়ী আখড়ায় চলছে গান। অন্যদিকে চলছে সকালের বাল্যসেবা – চিঁড়ে, কলা, মিষ্টি দই। ফকিরানিদের সঙ্গে করে এসেছেন আরো বেশ কয়েকজন ফকির। গাছতলার আখড়ায় তখন চলছে পঞ্চরসের গান। একসাথে গলা মিলিয়ে গাইছেন মল্লিকা আকার, আসুরা ফকিরানি, পারুলা ফকিরানি। দোতারায়, ঢোলে, একতারায় সঙ্গত করছেন উপস্থিত অন্যান্যরা। এইভাবেই সকাল গড়িয়ে আবারও দুপুর। খাওয়া দাওয়া করে খানিক বিশ্রাম নিয়ে ছবিগুলো পুনরায় যথাস্থানে টাঙিয়ে দেওয়া হলো। ওদিকে ভিতরের আখড়া ঘরে আসর শুরু হয়ে গেছে। মাসুম ফকিরের সাথে আসরে আজ যোগ দিয়েছেন মোয়াসিন ফকির, কালাম ফকির, পারুলা দি, মল্লিকা দি ও আরো অনেকে। কালাম দা বেহালা বাজিয়ে সঙ্গত করছেন গানে। কিছুক্ষণ বিরতি নিয়ে বিকেল থেকে আবার আসর শুরু হয়। গানে, নাচে, ভাবে আসর মাতিয়ে তোলেন পারুল দি ও অসুরা দি। এই হতে হতে মঞ্চের অনুষ্ঠানের সময় হলে আমরা মঞ্চের কাছে যাই আবার। মেলায় আগত মানুষজন কমবেশি প্রথমদিনও এসেছেন। তাই ছবিগুলোকে ঘিরে হয়তো প্রথমদিনের সেই উন্মাদনা নেই কিন্তু তাও অনেকেই ভিড় করেছেন ছবির সামনে আজও। ছবির ছবি তোলা, ছবির সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা এসব দেখতে দেখতে আমরাও কামড় বসাচ্ছি পেঁয়াজি, আলুর চপে। কেউ কেউ আবার এগিয়ে এসে জানতেও চাইছেন ছবিগুলোর বিষয়ে, ‘ তাহাদের ঘরবাড়ি’র বিষয়ে।

ইতিমধ্যে আমরা কানাঘুষোয় শুনতে পাই যে, আশ্রম ঘরে শিরনী বিতরণ করা হচ্ছে। বেশি দেরি না করে আমরাও একে একে নিজেদের শিরনী সংগ্রহ করতে চলে যাই পাকশালের দিকে। বিশাল এক অ্যালুমিনিয়ামের ডেচকি ভর্তি গাঢ় সিন্নি নিয়ে বসে আছেন এক ফকির এবং চাইলেই মিলছে এক হাতা ভর্তি সুস্বাদু সেই মিষ্টান্ন। তার পোশাকি নাম আবার তোবারক।

এরই ফাঁকে ছোটে গোলাম দাকে পেয়ে তাকে নিয়ে ছবির সামনে আমরাও এক দুখানা ছবি তুলে নিই। এই মানুষটা নিজে থেকে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলেই তো এই ছবি প্রদর্শনী করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু তাকে দুদণ্ড দাঁড় করিয়ে আর কয়েকটা যে ছবি তুলবো, তার জো নেই। রমজানের মাস চলছে, তার আশ্রম লাগোয়া দুটি মসজিদ, তায় আবার ফকিরি জীবনধারা নিয়ে শরিয়তিদের মধ্যে রয়েছে যথেষ্ট চাপানউতোর। তাই মিলনের গান গেয়ে তাড়াতাড়ি মাইকের গান বন্ধ করতে হবে, এই চিন্তায় ছোটে গোলাম দা হয়ে উঠেছেন অস্থির, এদিক ওদিক ছোটাছুটি করে সেই কথাই সবাইকে জানাচ্ছেন।

রাত বাড়ার সাথে সাথে মেলার ভিড়ও কমতে শুরু করেছে। দোকানিরা তাদের পসরা নিয়ে বাড়ির পথে রওনা দিতে শুরু করেছেন। গুটিকয়েক মানুষ তখনও বসে গান শুনছেন। গান শুনে বাড়ি ফেরার পথে কেউ কেউ আর একবার দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন ছবিগুলোর সামনে। তখন ঘড়িতে প্রায় দেড়টা, শুরু হলো মিলনের গীত। গীত যত সঞ্চারীর দিকে এগোলো, গীতের উন্মাদনাও চড়তে লাগলো। মঞ্চে ও মঞ্চের আশেপাশে দাঁড়িয়ে থাকা প্রায় সকলে তখন মিলনের গানে ও নাচে মশগুল।

মিলন তো এমনই হতে হয়। কারণ মিলন যে আনন্দের। এইভাবেই সঙ্গ হলো মেলা। আমরাও ছবি, স্ট্যান্ড সমস্ত গুটিয়ে রাতের মতো বিশ্রাম নিয়ে সকালে উঠে বেরিয়ে পড়লাম যে যার বাড়ির উদ্দেশ্যে। সাধু ফকিরদের চরণে প্রণাম জানিয়ে বিদায় নিতে নিতে এই আশাই করলাম যে আগামী বছরও এই পাগলদের ভিড়ে আমরা যেন আবারও মিশে যেতে পারি।

মন জুড়ানো ধূ ধূ প্রান্তরকে পেছনে ফেলে, আনন্দ ও অভিজ্ঞতার পুঁজি নিয়ে আমরা রইলাম একটা বছরের অপেক্ষায়…

Creative Team

R&D

Tahader Ghorbari

Cover Image

Sukrit De

Literature

Swagata Dhar

Photographs

Soham Chakraborty

Related Articles

Line – Seven Elements Series

ফোটোগ্রাফির একেবারে গোড়ার কথা হল সাত দৃশ্যাঙ্গের কথা। ফোটোগ্রাফিতে ‘কম্পোজিশান’ শব্দটি প্রায় সব্বাই শুনেছেন এবং কিছুদিন ফোটোগ্রাফি চর্চা করলেই ‘কম্পোজিশান’ সম্বন্ধে একটা মোটামুটি ধারণা জন্মায় প্রত্যেকেরই। প্রচলিত ‘কম্পোজিশান’-এর ধারণায় কিছু চিরন্তন পদ্ধতির কথাই বলা হয়ে থাকে বেশিরভাগ আলোচনাতেই। আধুনিক সময়ে দাঁড়িয়ে চিরন্তন পদ্ধতির বাইরে ‘কম্পোজিশান’-কে দেখা দরকার।

গঙ্গাসাগর… এক অভিজ্ঞতা

” সব সাগর বারবার l
গঙ্গা সাগর একবার … ”

বহুদিন থেকেই মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনতে শুনতে যাওয়ার ইচ্ছে প্রবল হয়ে উঠেছিলো যবে থেকে ক্যামেরা কিনেছি, আর তাতে বারুদ লাগিয়ে দিলো, রিসেন্ট এক এক্সিবিশন

  • খুব ভালো লাগলো 🙂 পরবর্তীতে চাক্ষুষ করবার ইচ্ছে রইলো 🙂 🙂

  • বাহ্ কি সুন্দর ছবি আর মানুষের মিলন।
    একটা মাটির গন্ধ যুক্ত মেলার খোঁজ পেলাম। ইচ্ছে রইলো কখনো যাওয়ার, ইলেক্ট্রিক পাগলার গান শোনার।

  • >